১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে 'বিপ্লবের বছর' বলা হয় কেন?
১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে 'বিপ্লবের বছর' বলা হয় কারণ এই বছরে ইউরোপজুড়ে ব্যাপক বিপ্লব ও গণ-আন্দোলনের ঢেউ ওঠে। ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সূত্র ধরে এই বিপ্লবগুলি একের পর এক দেশকে প্রভাবিত করে। নিচে এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সূচনা
১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্রান্সে রাজা লুই ফিলিপের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন শুরু হয়। এই বিপ্লবের ফলে লুই ফিলিপ সিংহাসন ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দ্বিতীয়বার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিপ্লব ইউরোপের অন্যান্য দেশে বিপ্লব ও গণ-আন্দোলনের প্রেরণা জাগায়।
জার্মানি ও ইতালি
জার্মানি ও ইতালির বিভিন্ন রাজ্যে, জনগণ স্বৈরাচার ও আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এই অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনও বৃদ্ধি পায়।
বিশেষ করে ইতালিতে বিভিন্ন রাজ্য একত্রিত হয়ে একটি সংযুক্ত ইতালি গঠনের প্রচেষ্টা শুরু করে।
অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি
অস্ট্রিয়ায়, মেটারনিখের নীতি ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণ-আন্দোলন শুরু হয়। মেটারনিখকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
হাঙ্গেরিতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু হয় এবং স্বাধীনতার দাবি জোরদার হয়।
সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ে
সুইজারল্যান্ডে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
নরওয়েতেও রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের জন্য আন্দোলন দেখা যায়।
বিপ্লবের বিস্তার
১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের এক বছরে এতগুলি দেশে একসঙ্গে বিপ্লব ও গণ-আন্দোলন হওয়ার কারণে এই বছরকে 'বিপ্লবের বছর' বলা হয়। এই বিপ্লবগুলি মূলত ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজধানীগুলিকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়, যা এই আন্দোলনগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
উপসংহার
১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবগুলি ইউরোপের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই বিপ্লবগুলি জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা ও আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেরণা জাগায় এবং ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় পরিবর্তন আনে।
Tags: #Europe