কার্লসবাড ডিক্রি (Carlsbad Decrees) বলতে কি বোঝ?
উনিশ শতকের প্রথম দিকে জার্মানিতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এবং উদারনৈতিক চিন্তাধারা বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। ছাত্র সংগঠনগুলি (Burschenschaften) এই আন্দোলনের প্রধান চালিকা শক্তি ছিল। জাতীয় ঐক্য ও উদারনৈতিক সংস্কারের দাবিতে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিল।
কার্লসবাড ডিক্রির জারি করার কারণ
১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে কার্ল অগাস্ট ভন কোৎজেবু নামে একজন প্রতিক্রিয়াশীল সাংবাদিককে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনা মেটারনিখ এবং অন্যান্য প্রতিক্রিয়াশীল নেতাদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করে, তারা অনুভব করেছিলেন যে এই জাতীয়তাবাদী এবং উদারনৈতিক আন্দোলনগুলি স্থিতাবস্থা এবং সমাজের শৃঙ্খলার জন্য হুমকিস্বরূপ।
১. সকল রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বিশেষ করে Burschenschaften-গুলিকে লক্ষ্য করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
২. সংবাদপত্রের উপর কঠোর সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছিল। সমস্ত প্রকাশনা সরকারের অনুমোদন পেতে বাধ্য হয়।
3. বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র এবং অধ্যাপকদের রাজনৈতিক কার্যকলাপ নজরদারি করার জন্য গোয়েন্দা নিয়োগ করা হয়েছিল।
মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং জার্মান বুন্দের সভাপতি। তিনি 'কার্লসবাড ডিক্রি' জারি করার মাধ্যমে জার্মানিতে উদারনৈতিক আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিলেন। তার মতে, এই ডিক্রিগুলি জার্মানিতে স্থিতাবস্থা এবং রক্ষণশীল শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।
কার্লসবাড ডিক্রির মাধ্যমে জার্মানিতে উদারনৈতিক আন্দোলন এবং জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার উপর কঠোর দমননীতি প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে কিছু সময়ের জন্য রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখা গেলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বৃহত্তর বিদ্রোহ এবং বিপ্লবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
Tags: #Europe