বাঙালির প্রথম সম্রাট যিনি
সম্রাট শব্দটির সঙ্গে আমরা কমবেশি প্রায় সকলেই পরিচিত। ভারতের ইতিহাসে কালের নিয়মে মৌর্য সম্রাট থেকে শুরু করে মুঘল সম্রাট পর্যন্ত একাধিক সম্রাটের উত্থান ও পতন ঘটেছে। কিন্তু বাঙালির প্রথম সম্রাট আবার কে? এই প্রশ্ন অনেকেই হয়তো অবাক করবে।
বাঙালির সম্রাট একজন ছিলেন না; ছিলেন একাধিক। তাহলে বাঙালির প্রথম সম্রাট কে ছিলেন। তিনি ছিলেন শশাঙ্ক। কারণ লিখিত ইতিহাসে তিনি হলেন সর্বপ্রথম।
বিশ্ব বিখ্যাত ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে সম্রাট বলেই পরিচিত করেছেন।
ইতিহাসের পাতায় গৌররাজ শশাঙ্ক কেবল একটি পাঠ হয়ে রয়ে গেছে। তিনি সম্রাট শশাঙ্ক হওয়া সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত। হয়তো এর কারণ হতে পারে তার সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য আজ পর্যন্ত উপলব্ধ নেই বলে। যেমন বিশাখ দত্তের মুদ্রারাক্ষস, মেগাস্থিনিসের বর্ণনা থেকে ভারতবর্ষের প্রথম সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত সম্পর্কে জানা যায়।
গবেষকরা নানা মুদ্রা বা শিলালিপি থেকে টুকরো টুকরো অসম্পন্ন আখ্যান আবিষ্কার করেছেন। তার সাহায্যে আমরা শশাঙ্ককে বাঙালির প্রথম সম্রাট বলতে পারছি। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আরও অজানা তথ্য জানা যাবে। আপাতত যা পেয়েছি তা নিয়েই আমরা তুষ্ট থাকি।
শশাঙ্কের প্রধান কৃতিত্ব
শশাঙ্ক ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি রাজ। তিনি গৌড় রাজ্যকে সমৃদ্ধশালী সাম্রাজ্যে পরিণত করেন। তাঁর প্রধান কৃতিত্ব গুলি হলঃ
- ১। তিনি পরবর্তীগুপ্ত রাজাদের কাছ থেকে গৌর রাজ্যকে স্বাধীন করেন এবং বাঙালির সার্বভৌম সাম্রাজ্য স্থাপন করেন।
- ২। তিনি সমগ্র বঙ্গদেশ অধিকার করেন। দন্ডভুক্তি (মেদিনীপুর) উৎকল ও কঙ্গোদ (উত্তর ও দক্ষিণ উড়িষ্যা) অঞ্চল গুলি নিজেও রাজ্যের অধিকারী আনেন।
- ৩। মালব রাজ দেবগুপ্তের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন এবং কনৌজ ও থানেশ্বের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান চালান।
- ৪। শশাঙ্ক একজন দক্ষ সেনাপতি ও কূটনীতিবিদ ছিলেন। তাঁর সামরিক দক্ষতার কারণেই তিনি দীর্ঘদিন রাজ্য শাসন করতে পেরেছিলেন।