ধননন্দের পরাজয়ের কারণ উল্লেখ কর।
ধননন্দ, যিনি ছিলেন মগধের নন্দ রাজবংশের শেষ রাজা, তাকে পরাজিত করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এবং তার পরামর্শদাতা চাণক্য। ধননন্দের পরাজয়ের পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ ছিল:
ধননন্দের পরাজয়ের কারণ
১. জনগণের অসন্তোষ
ধননন্দের শাসনের সময় জনগণের উপর কঠোর কর আরোপ এবং অত্যাচারিত শাসন ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। এই অসন্তোষ চন্দ্রগুপ্ত এবং চাণক্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করে। চাণক্য এই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সমর্থন পেতে সক্ষম হন।
২. চাণক্যের কূটনীতি
চাণক্য বা কৌটিল্য, যিনি ছিলেন একজন মহান কূটনীতিবিদ এবং পন্ডিত, তার বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশলী পরিকল্পনা ধননন্দের পতনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চাণক্য চন্দ্রগুপ্তকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন এবং একে একে ধননন্দের শক্তির উৎসগুলোকে ধ্বংস করেন।
৩. সেনাবাহিনীর অদক্ষতা
ধননন্দের সেনাবাহিনী সংখ্যায় বড় হলেও তা সুশৃঙ্খল এবং প্রশিক্ষিত ছিল না। অন্যদিকে, চন্দ্রগুপ্তের নেতৃত্বে মৌর্য সেনাবাহিনী ছিল সুশৃঙ্খল, প্রশিক্ষিত এবং যুদ্ধে দক্ষ। এই সামরিক দিক থেকে ধননন্দ পিছিয়ে পড়ে।
৪. অভ্যন্তরীণ বিশ্বাসঘাতকতা
ধননন্দের শাসনের শেষ দিকে তার রাজদরবারে বিশ্বাসঘাতকতা এবং অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র বাড়তে থাকে। তার নিজস্ব দরবারের লোকেরাই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে, যা তার শাসন দুর্বল করে তোলে।
৫. শক্তিশালী নেতৃত্বের অভাব
ধননন্দ একটি শক্তিশালী এবং প্রজ্ঞাবান নেতার গুণাবলি থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তিনি তার শাসন প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করতে সক্ষম হননি। অন্যদিকে, চন্দ্রগুপ্ত তার দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
এই কারণগুলো মিলে ধননন্দের পতনের এবং চন্দ্রগুপ্তের উত্থানের পথ প্রশস্ত করে। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ভারতবর্ষে একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন, যা ইতিহাসে মৌর্য সাম্রাজ্য নামে পরিচিত।
Tags: #Ancient