মৌর্য শাসনকে কি সীমাহীন স্বৈরাচার বলা যায়?

★★★★★
মৌর্য শাসনব্যবস্থাকে সীমাহীন স্বৈরাচার বলা যুক্তিসঙ্গত নয়। চিরাচরিত আইন, মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ, সেনাপতির পরামর্শ এবং স্বায়ত্তশাসন দ্বারা রাজার ক্ষমত

মৌর্য শাসনব্যবস্থাকে সীমাহীন স্বৈরাচার বলা যুক্তিসঙ্গত নয়। মৌর্য যুগে শাসকদের ক্ষমতা অনেক হলেও, তারা বিভিন্ন আইনি ও নীতিগত সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই শাসন পরিচালনা করতেন।

মৌর্য শাসনব্যবস্থাকে সীমাহীন স্বৈরাচার বলা যুক্তিসঙ্গত নয়। চিরাচরিত আইন, মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ, সেনাপতির পরামর্শ এবং স্বায়ত্তশাসন দ্বারা রাজার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ ছিল।

মৌর্য শাসনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা

1. চিরাচরিত আইন অনুসরণ:

   মৌর্য শাসকেরা অপ্রতিহত ক্ষমতার অধিকারী হলেও, তারা চিরাচরিত আইন ও সামাজিক নিয়ম মেনে চলতেন। রাজা কখনও নিজ ইচ্ছামতো শাসন পরিচালনা করতেন না, বরং সমাজের স্থাপিত নিয়ম এবং ধর্মীয় নির্দেশনা মেনে চলতেন। 


2. মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ:

   রাজা শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ গ্রহণ করতেন এবং তাদের মতামত উপেক্ষা করতেন না। মৌর্য রাজ্যে মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্ব ছিল অত্যন্ত বেশি এবং রাজার সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।


3. সেনাপতির পরামর্শ গ্রহণ:

   মৌর্য যুগে রাজারা সেনাপ্রধান হলেও, তারা যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাপতির পরামর্শ গ্রহণ করতেন। এতে যুদ্ধের কৌশল এবং কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হতো। এটি নির্দেশ করে যে, রাজারা নিজেদের ক্ষমতাকে সীমিত রেখে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলতেন।


4. স্বায়ত্তশাসন:

   মৌর্য সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন ছিল। স্থানীয় প্রশাসকগণ নিজেদের অঞ্চলে স্বাধীনভাবে শাসন করতেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতেন। এটি কেন্দ্রীয় শাসনের সীমাবদ্ধতা এবং স্থানীয় প্রশাসনের গুরুত্বকে নির্দেশ করে।


উপসংহার

নিরপেক্ষ বিচারে মৌর্য শাসনব্যবস্থাকে সীমাহীন স্বৈরাচার বলা যুক্তিসঙ্গত নয়। যদিও রাজার ক্ষমতা ছিল ব্যাপক, তবুও তারা আইন, মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ, সেনাপতির পরামর্শ এবং স্বায়ত্তশাসনের মাধ্যমে শাসন পরিচালনা করতেন। মৌর্য যুগের শাসনব্যবস্থা একটি ভারসাম্যপূর্ণ শাসনপ্রক্রিয়া ছিল যা শাসকদের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতো এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতো।

Tags:
Next Post Previous Post