মৌর্য যুগের রাজস্ব ব্যবস্থা কেমন ছিল?

★★★★★
মৌর্য যুগে রাজস্ব ব্যবস্থা ছিল সুশৃঙ্খল ও সুপরিকল্পিত। রাজস্বের হার ছিল উৎপন্ন ফসলের ১/৬ বা ১/৪ অংশ। ভাগ ও বলি কর ছাড়াও খনি, বন, ফেরিঘাট, হাটবাজার...

মৌর্য যুগের রাজস্ব ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং সুপরিকল্পিত, যা সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করেছিল। রাজস্বের হার সাধারণত উৎপন্ন ফসলের ১/৬ বা ১/৪ অংশ ছিল এবং এটি কৃষকদের থেকে সংগৃহীত হতো। করের দুটি প্রধান ধরন ছিল ভাগ এবং বলি। এছাড়াও খনি, বন, ফেরিঘাট, হাটবাজার, আমদানি ও রপ্তানি থেকে শুল্ক আদায় করা হতো। দক্ষ প্রশাসনিক কর্মচারীরা, যেমন সমাহর্তা, রাজস্ব সংগ্রহ এবং তদারকির কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতেন। এই সুবিন্যস্ত ব্যবস্থা মৌর্য সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং সামরিক ব্যয়ের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

মৌর্য যুগের রাজস্ব ব্যবস্থা

মৌর্য যুগের রাজস্ব ব্যবস্থা

১. রাজস্বের হার

মৌর্য যুগে উৎপন্ন ফসলের একটি নির্দিষ্ট অংশ রাজস্ব হিসেবে সংগ্রহ করা হতো। সাধারণত, এই হার ছিল উৎপন্ন ফসলের ১/৬ বা ১/৪ অংশ। এই নির্ধারিত হার কৃষকদের থেকে নেওয়া হতো এবং এটি ছিল সাম্রাজ্যের প্রধান রাজস্ব উৎস।


২. করের ধরন

মৌর্য সাম্রাজ্যে দু ধরনের কর প্রচলিত ছিল, যথা ভাগ ও বলি:

  • ভাগ: এটি ছিল ফসলের একটি নির্দিষ্ট অংশ যা কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হতো।
  • বলি: এটি ছিল পশু এবং অন্যান্য সম্পত্তির উপর আরোপিত কর।


৩. শুল্ক ও অন্যান্য কর

মৌর্য যুগে বিভিন্ন স্থান থেকে শুল্ক আদায় করা হতো। শুল্কের মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহের প্রধান উৎসগুলি ছিল:

  • খনি: খনি থেকে সংগৃহীত ধাতু এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের উপর কর আরোপ করা হতো।
  • বন: বনজ সম্পদ এবং বন ব্যবহারের উপর কর নির্ধারণ করা হতো।
  • ফেরিঘাট ও হাটবাজার: ফেরিঘাট ও হাটবাজার থেকে শুল্ক আদায় করা হতো, যা বাণিজ্যের ওপর একটি উল্লেখযোগ্য কর ছিল।
  • আমদানি ও রপ্তানি: বিভিন্ন পণ্য আমদানি ও রপ্তানির উপরও শুল্ক আরোপ করা হতো।


৪. প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান

মৌর্য সাম্রাজ্যে রাজস্ব সংগ্রহের জন্য দক্ষ প্রশাসনিক কর্মচারীরা নিয়োজিত ছিলেন। সমাহর্তা এবং অন্যান্য রাজস্ব কর্মকর্তারা সুষ্ঠুভাবে রাজস্ব সংগ্রহ ও তদারকি করতেন। তাঁদের কাজ ছিল রাজস্ব আদায়, হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ এবং যথাযথভাবে তা বিতরণ করা।


৫. অর্থনৈতিক প্রভাব

মৌর্য যুগের রাজস্ব ব্যবস্থা সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করেছিল। এই সুবিন্যস্ত ব্যবস্থা সাম্রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং সামরিক ব্যয় নির্বাহে সহায়ক ছিল।


মৌর্য যুগের রাজস্ব ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং সুপরিকল্পিত। এই ব্যবস্থা সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

Tags:
Next Post Previous Post