কে, কেন 'অমিত্রঘাত' বা 'শত্রুনিধনকারী' উপাধি নিয়ে ছিল?

★★★★★
বিন্দুসার প্রায় ষোলোজন রাজাকে পরাজিত করে তাঁর সাম্রাজ্যের সীমানা বিস্তার করেন এবং 'অমিত্রঘাত' বা 'শত্রুনিধনকারী' উপাধি গ্রহণ করেন।

মৌর্য সম্রাট বিন্দুসার 'অমিত্রঘাত' বা 'শত্রুনিধনকারী' উপাধি গ্রহণের পেছনে তাঁর সামরিক দক্ষতা এবং বিজয়ের কৃতিত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিব্বতীয় ঐতিহাসিক তারানাথের রচনা থেকে জানা যায় যে, বিন্দুসার প্রায় ষোলোজন রাজাকে পরাজিত করে তাঁর সাম্রাজ্যের সীমানা ব্যাপকভাবে বিস্তার করেন। এই বিজয় এবং তাঁর শত্রুনিধনের দক্ষতা তাঁকে এই উপাধি অর্জন করতে সহায়তা করে।

অমিত্রঘাত বা শত্রুনিধনকারী সম্রাট


১. সাম্রাজ্য বিস্তার

বিন্দুসার তাঁর পিতার মতোই একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। তিনি বিভিন্ন রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং তাদের পরাজিত করে তাঁর সাম্রাজ্যের সীমানা উত্তর থেকে দক্ষিণ এবং পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। তারানাথের মতে, বিন্দুসার মোট ষোলোজন রাজাকে পরাজিত করেন, যা তাঁর সামরিক কৌশল ও নেতৃত্বের প্রমাণ।


২. সামরিক দক্ষতা

বিন্দুসারের সামরিক দক্ষতা এবং তাঁর সেনাবাহিনীর শক্তি তাঁকে এক অপ্রতিরোধ্য শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। তাঁর নেতৃত্বে মৌর্য সেনাবাহিনী একের পর এক যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। শত্রুদের বিরুদ্ধে এই নিরলস সংগ্রাম ও বিজয়ের ফলে বিন্দুসার 'অমিত্রঘাত' উপাধি অর্জন করেন।


৩. রাজনৈতিক প্রভাব

বিন্দুসারের 'অমিত্রঘাত' উপাধি তাঁর শাসনের রাজনৈতিক প্রভাবকেও প্রতিফলিত করে। শত্রুদের পরাজিত করে এবং তাঁদের রাজ্য দখল করে তিনি মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করেন। এই উপাধি তাঁর শাসনের কঠোরতা ও শত্রুদের বিরুদ্ধে তাঁর নিরলস সংগ্রামের প্রতীক।


৪. ঐতিহাসিক স্বীকৃতি

তিব্বতীয় ঐতিহাসিক তারানাথের রচনা বিন্দুসারের শাসন ও কৃতিত্বকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে। তাঁর শত্রুনিধনের দক্ষতা এবং সাম্রাজ্য বিস্তারের ফলে বিন্দুসারকে 'অমিত্রঘাত' উপাধিতে ভূষিত করা হয়, যা তাঁকে ইতিহাসে একজন শক্তিশালী এবং বিজয়ী সম্রাট হিসেবে পরিচিত করে।


বিন্দুসারের এই উপাধি অর্জন তাঁর সামরিক কৌশল, শাসনকালের বিজয় এবং সাম্রাজ্য বিস্তারের মাধ্যমে সম্ভব হয়। তাঁর এই কৃতিত্ব মৌর্য সাম্রাজ্যের শক্তি ও স্থিতিশীলতা আরও দৃঢ় করে তোলে।

Tags:
Next Post Previous Post