অশোকের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের কারণ ও প্রভাব

★★★★★
অশোকের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের পেছনে ছিল কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা, সামাজিক শ্রেণির বৈষম্য দূরীকরণ এবং রাজ্যে শান্তি ও উৎপাদন সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্য।

অশোকের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের বিষয়টি ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ত্রয়োদশ শিলালিপি থেকে জানা যায় যে অশোকের এই ধর্ম গ্রহণের পেছনে ছিল কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ। নীচে এই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল:

অশোকের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের পেছনে ছিল কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা, সামাজিক শ্রেণির বৈষম্য দূরীকরণ এবং রাজ্যে শান্তি ও উৎপাদন সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্য।

কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা

কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা অশোকের মানসিক পরিবর্তনে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি এবং অসংখ্য মানুষের কষ্ট দেখে অশোক গভীর অনুশোচনায় ভুগতে থাকেন। এর ফলস্বরূপ, তিনি অহিংসা এবং শান্তির পথ অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে অশোক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন যা অহিংসার মূলনীতি প্রচার করে।


সামাজিক শ্রেণির বৈষম্য দূরীকরণ

অনেকের মতে, অশোক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন সামাজিক শ্রেণির বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে। তৎকালীন সমাজে বৌদ্ধধর্ম একটি শান্তিবাদী ধর্ম হিসেবে পরিচিত ছিল যা সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে সাম্য এবং ন্যায়ের প্রচার করে। অশোক এই ধর্মের মাধ্যমে সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।


উৎপাদন সুনিশ্চিত ও শান্তি প্রতিষ্ঠা

অশোকের রাজত্বকালে পাঞ্জাব থেকে পেন্নার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা অধিকৃত ছিল। এই বিশাল অঞ্চলের মানুষের উৎপাদন সুনিশ্চিত করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা অশোকের একটি প্রধান লক্ষ্য ছিল। বৌদ্ধধর্মের নীতি অনুসরণ করে অশোক শান্তি প্রতিষ্ঠার এবং উৎপাদন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যান। বৌদ্ধধর্মের অহিংসা, সহমর্মিতা এবং ন্যায়বিচারিক নীতিগুলি রাজ্যে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।


উপসংহার

অশোকের বৌদ্ধধর্ম গ্রহণের পেছনে ছিল কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে প্রাপ্ত মানসিক পরিবর্তন, সামাজিক শ্রেণির বৈষম্য দূরীকরণ এবং বিস্তৃত রাজ্যে শান্তি ও উৎপাদন সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্য। এই কারণগুলো মিলিতভাবে অশোককে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণে প্রভাবিত করেছিল এবং তার রাজত্বকালে একটি শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে সহায়তা করেছিল।

Tags:
Next Post Previous Post