কীভাবে দস্তকের অপব্যবহার হয়েছিল ও বাংলার অর্থনীতির ওপর তার কি প্রভাব হয়েছিল?
মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র ও বাংলার অর্থনীতির সমস্যা
মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র ১৭১৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলায় বাণিজ্য করার জন্য যে দস্তক বা ছাড়পত্র প্রদান করেছিলেন। তার ফলে বাংলার অর্থনীতি একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয়।
দস্তকের অপব্যবহার ও বাংলার অর্থনীতি
- 1. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বণিকদের দস্তকের অপব্যবহারের ফলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ঘোরতর সমস্যার মুখোমুখি হয়। নবাব সিরাজ উদ-দৌলার আমলেই কোম্পানির কর্মচারীরা ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক স্বার্থপূরণে দস্তক ব্যবহার করতে থাকলে নবাব তার প্রাপ্য শুল্ক থেকে বঞ্চিত হন।
- 2. দস্তকের অপব্যবহারের মাধ্যমে কোম্পানির কর্মচারীরা প্রচুর ধনসম্পদ সংগ্রহ করে, ফলে সেই অর্থসম্পদের বলে বলীয়ান হয়ে তারা পরবর্তীকালে ভারতে সাম্রাজ্যবিস্তারে প্রয়াসী হয়।
- 3. নবাব মির কাশিমের শাসনকালে কোম্পানির কর্মচারীরা তাদের ব্যক্তিগত বাণিজ্যে দস্তকের অপব্যবহার করতে শুরু করলে নবাবের রাজস্বে ঘাটতি দেখা দেয়। অন্যদিকে দেশীয় বণিকদের থেকে বাধ্যতামূলক শুল্ক আদায়ের ফলে তারাও অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ইউরোপীয় বণিকরাও ব্রিটিশ কোম্পানির দস্তকের অপব্যবহার সম্পর্কে নবাবের কাছে নালিশ জানাতে থাকে।
এভাবে কোম্পানির কর্মচারীরা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাবসাবাণিজ্যে দস্তককে বেআইনিভাবে ব্যবহার করার ফলে বাংলার অর্থনীতি নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়।
নবাব মির কাশিম গৃহীত পদক্ষেপ
কোম্পানির কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ব্যাবসায় দস্তকের অপব্যবহার রুখতে নবাব মির কাশিম দেশীয় বণিকদের উপর থেকে বাণিজ্য শুল্ক তুলে নেন। এর ফলে দেশীয় বণিকরা বাণিজ্যিক সংকট ও অসম প্রতিযোগিতার হাত থেকে রক্ষা পেলেও নবাবের রাজকোশে অর্থ আদায় না হওয়ার ফলে তিনি প্রবল অর্থসংকটের মুখোমুখি হন।
1. দস্তক ব্যবহারের প্রধান পরিণাম কী?
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দস্তকের অপব্যবহারে নবাব সিরাজ উদ-দৌলার আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ঘোরতর সমস্যার মুখোমুখি হয়।
2. দস্তক অপব্যবহারের ফলে কী ঘটে?
কোম্পানির কর্মচারীরা ধনসম্পদ সংগ্রহ করে এবং তাদের ব্যাবসার প্রচারে সহায়তা করে, যা পরবর্তীতে ভারতে সাম্রাজ্যবিস্তারে প্রয়োজনীয় হয়।
3. নবাব মির কাশিমের পদক্ষেপ কী?
নবাব মির কাশিম দেশীয় বণিকদের উপর বাণিজ্য শুল্ক তুলে নেন যাতে দেশীয় বণিকরা বাণিজ্যিক সংকট থেকে রক্ষা পেতে পারেন।