বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব আলোচনা কর।

significance-of-the-battle-of-buxar

 ভারতীয় ইতিহাসে বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য

বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব
1. চূড়ান্ত বিজয়
2. ভারতে ইংরেজদের আধিপত্যের সূচনা
3. দেওয়ানি লাভ
4. বাংলায় কোম্পানির প্রতিষ্ঠা লাভ


বক্সারের যুদ্ধ হয়েছিল ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বক্সার নামক জায়গায়। এই যুদ্ধ হয়েছিল বাংলার নবাব মির কাশিম, অযোধ্যার নবাব সুজা উদ-দৌলা ও মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের মিলিত বাহিনীর সঙ্গে ইংরেজদের। ভারতের ইতিহাসে বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ঐতিহাসিক বিপানচন্দ্র বলেছেন, 'বক্সারের যুদ্ধ সর্বাধিক তাৎপর্যপূর্ণ'।


বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব:

1. চূড়ান্ত বিজয়:

পলাশির যুদ্ধে ভারতে ইংরেজদের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হলেও বক্সারের যুদ্ধে তা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পলাশির যুদ্ধে ইংরেজ কোম্পানি কূটনীতি ও বিশ্বাসঘাতকতার আশ্রয় নিয়ে অনভিজ্ঞ নবাবকে পরাজিত করে। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হন দিল্লির সম্রাটসহ প্রাদেশিক দুই নবাব। 
ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বলেন, 'পলাশির যুদ্ধ ছিল কয়েকটি কামানের লড়াই, কিন্তু বক্সারের যুদ্ধ ছিল চূড়ান্ত বিজয়'।

2. ভারতে ইংরেজদের আধিপত্যের সূচনা:

বক্সারের যুদ্ধে কেবলমাত্র বাংলার নবাব মির কাশিমই নন, তার সঙ্গে পরাজিত হন অযোধ্যার নবাব ও দিল্লির মুঘল বাদশাহ। এর ফলে ভারতবর্ষের উপর ইংরেজদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়। 'নামসর্বস্ব' মুঘল সম্রাট ইংরেজ কোম্পানির বৃত্তিভোগীতে পরিণত হন।

3. দেওয়ানি লাভ:

বক্সারের যুদ্ধের পর ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ানি অধিকার লাভ করে। এর ফলে কোম্পানির বৈধ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।

4. বাংলায় কোম্পানির প্রতিষ্ঠা লাভ:

বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর ইংরেজ কোম্পানি মির জাফরকে পুতুল নবাব হিসেবে সিংহাসনে বসায়। তার মৃত্যুর পর তার নাবালক পুত্র নজম উদ-দৌলাকে সিংহাসনে বসিয়ে ইংরেজরা সমস্ত সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অধিকার করে।


এককথায় বলা যায়, পলাশির যুদ্ধের ফলে ইংরেজরা যে ক্ষমতালাভ করেছিল তা পরিপূর্ণতা লাভ করে বক্সারের যুদ্ধের পর। এই যুদ্ধের পর বাংলাদেশে স্বাধীন নবাবির অবসান ঘটে। বস্তুত ইংরেজদের প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়।


Related Short Question:

1. বক্সারের যুদ্ধ কখন হয়েছিল?

   ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে, বাংলার নবাব মির কাশিম, অযোধ্যার নবাব সুজা উদ-দৌলা ও মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে ইংরেজদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে।


2. বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব কী ছিল?

   বক্সারের যুদ্ধ ইংরেজদের কর্তৃত্বের প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে, সেই সময়ে দিল্লির সম্রাট ও প্রাদেশিক দুই নবাবকে হারানোর মাধ্যমে।


3. বক্সারের যুদ্ধের পরিণাম কী ছিল?

   ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা-বিহার-উড়িশ্যার দেওয়ানি অধিকার লাভ করে, এবং বাংলাদেশে স্বাধীন নবাবির শেষ।

Tags:
Next Post Previous Post