বৃহদ্রথ: একটি প্রাচীন ভারতীয় রাজবংশের উত্থান ও পতন

বৃহদ্রথ ছিল একটি রাজবংশ যারা খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ এবং ৩য় শতাব্দীতে প্রাচীন ভারতীয় রাজ্য মগধে শাসন করেছিল। বিম্বিসার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, বৃহদ্রথগণ পূর্ববর্তী প্রদ্যোত রাজবংশকে উৎখাত করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তারা বিম্বিসার, অজাতশত্রু এবং মহাপদ্ম নন্দের মতো শাসকদের মগধের ইতিহাসে স্থায়ী প্রভাব রেখে প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ল্যান্ডস্কেপ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। বৃহদ্রথদের রাজত্ব আঞ্চলিক সম্প্রসারণ, বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা এবং মৌর্য সাম্রাজ্যের শেষ রূপান্তর প্রত্যক্ষ করেছিল, যা ভারতীয় ইতিহাসে একটি পরিবর্তনশীল সময়কে চিহ্নিত করে।

 1. ক্ষমতায় উত্থান: 

বৃহদ্রথদের ক্ষমতায় উত্থান প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় চিহ্নিত করে। রাজবংশটি খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে মগধের শক্তিশালী রাজ্যে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য শাসক প্রদ্যোতা রাজবংশকে উৎখাত করে আবির্ভূত হয়। এই রূপান্তরের অগ্রভাগে ছিলেন বৃহদ্রথ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিম্বিসার। তার সামরিক দক্ষতা এবং কূটনৈতিক দক্ষতার জন্য পরিচিত, বিম্বিসার বিজয় এবং কৌশলগত জোটের মাধ্যমে রাজ্যের অঞ্চলগুলি প্রসারিত করেছিলেন। গৌতম বুদ্ধের পৃষ্ঠপোষকতা এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

 বিম্বিসারের উত্তরসূরি, অজাতশত্রুর নেতৃত্বে, বৃহদ্রথরা তাদের ক্ষমতায় আরোহন অব্যাহত রাখে। রাজা প্রসেনজিতের নেতৃত্বে অজাতশত্রু অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল, বিশেষ করে প্রতিবেশী রাজ্য কোসলের সাথে দ্বন্দ্ব। এই বাধা সত্ত্বেও, অজাতশত্রু পাটলিপুত্রের রাজধানী শহরকে সুরক্ষিত করেন এবং মগধের প্রভাবকে আরও সুসংহত করে আরও সামরিক অভিযান শুরু করেন। বৃহদ্রথদের ক্ষমতায় উত্থানের ফলে মগধ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে একটি শক্তিশালী রাজ্যে রূপান্তরিত হয়েছিল, যা প্রাচীন ভারতে তার চূড়ান্ত আধিপত্যের মঞ্চ তৈরি করেছিল।

 বৃহদ্রথদের ক্ষমতায় উত্থান প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের গতিপথে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল। তাদের বিজয় এবং রাজনৈতিক কৌশলগুলি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অধীনে মৌর্য সাম্রাজ্যের উত্থানের ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যিনি বৃহদ্রথদের উৎখাত করেছিলেন এবং অখন্ড ভারতের প্রথম সম্রাট হয়েছিলেন। বৃহদ্রথদের রাজত্ব উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক বিকাশের সাক্ষী ছিল, কারণ তারা বৌদ্ধধর্মকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ও শৈল্পিক সাধনাকে উৎসাহিত করেছিল। ক্ষমতায় তাদের উত্থান শুধুমাত্র মগধের ভাগ্যই তৈরি করেনি বরং ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপকেও প্রভাবিত করেছে, যা ইতিহাসের ইতিহাসে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছে।

 2. বিম্বিসার: 

বৃহদ্রথ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিম্বিসার ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে মগধে ক্ষমতায় আরোহণ করেন, নিজেকে একজন শক্তিশালী শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। বিম্বিসার তার সামরিক শক্তি এবং কৌশলগত জোটের জন্য বিখ্যাত, যা তাকে রাজ্যের অঞ্চলগুলি প্রসারিত করতে দেয়। তার শাসনামল মগধে সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিকাশের সময়কাল চিহ্নিত করেছিল।

 গৌতম বুদ্ধের বিম্বিসার পৃষ্ঠপোষকতা বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তিনি বুদ্ধের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাঁর অন্যতম প্রধান শিষ্য হয়ে ওঠেন। বিম্বিসার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী সম্প্রদায়কে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছিলেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা এবং সুরক্ষা প্রদান করেছিলেন। বুদ্ধের সাথে তার মেলামেশা মগধে এবং তার বাইরেও বৌদ্ধ ধর্মের বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছিল, যা প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃশ্যপটে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল।

 তার সামরিক এবং ধর্মীয় অর্জন ছাড়াও, বিম্বিসার তার কূটনৈতিক দক্ষতার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সাথে জোট গঠন করেছিলেন, যেমন কোসল, যা স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং মগধের সীমানা সুরক্ষিত করতে সাহায্য করেছিল। বিম্বিসারের জ্ঞানী শাসন ও কূটনীতি তাকে তার সমসাময়িকদের মধ্যে একজন সম্মানিত শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং মগধের সামগ্রিক সমৃদ্ধিতে অবদান রাখে।

 প্রথম বৃহদ্রথ রাজা হিসেবে বিম্বিসারের রাজত্ব রাজবংশের পরবর্তী ক্ষমতায় উত্থানের ভিত্তি স্থাপন করে। তার সামরিক বিজয়, বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা, এবং কূটনৈতিক দক্ষতা মগধের ইতিহাসে একটি অমার্জনীয় চিহ্ন রেখে গেছে, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রাজ্যের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক গতিপথকে গঠন করে।

 3. অজাতশত্রু: 

বৃহদ্রথ রাজবংশের বিম্বিসারের উত্তরসূরি অজাতশত্রু মগধের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে মগধ শাসন করেন এবং তার পিতার সম্প্রসারণ ও একত্রীকরণের উত্তরাধিকার অব্যাহত রাখেন। রাজা প্রসেনজিতের নেতৃত্বে অজাতশত্রু বিশেষ করে প্রতিবেশী রাজ্য কোসল থেকে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। এই দ্বন্দ্বগুলি মগধের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় চিহ্নিত করেছিল, কারণ অজাতশত্রু তার আধিপত্য জাহির করতে এবং রাজ্যের সীমানা সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলেন।

 মগধকে বাহ্যিক হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য, অজাতশত্রু পাটলিপুত্র শহরকে তার রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলেন এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো দিয়ে এটিকে সুরক্ষিত করেন। এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কেবল আক্রমণকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে কাজ করেনি বরং রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রশাসনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। পাটলিপুত্র পরবর্তী রাজবংশের অধীনে প্রাচীন ভারতে একটি বিশিষ্ট শহর হয়ে উঠবে।

 দ্বন্দ্ব এবং সামরিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, অজাতশত্রুর রাজত্ব আরও আঞ্চলিক সম্প্রসারণ প্রত্যক্ষ করেছিল। তিনি সফলভাবে কাশী শহরকে যুক্ত করেন এবং অন্যান্য অঞ্চলে মগধের প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেন। অজাতশত্রুর শাসনকাল ভারতীয় উপমহাদেশে মগধকে একটি প্রভাবশালী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং দৃঢ়সংকল্প দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল।

 অজাতশত্রুর রাজত্ব, তার সামরিক অভিযান এবং পাটলিপুত্রের দুর্গের মাধ্যমে, বৃহদ্রথ রাজবংশকে শক্তিশালী করতে এবং একটি শক্তিশালী রাজ্য হিসাবে মগধের অবস্থানকে দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। একজন যোদ্ধা রাজা হিসেবে তার উত্তরাধিকার এবং মগধের সম্প্রসারণ ও একত্রীকরণে তার অবদান চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অধীনে মৌর্য সাম্রাজ্যের পরবর্তী উত্থানের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

 4. মহাপদ্ম নন্দ: 

বৃহদ্রথ রাজবংশের বিম্বিসারের উত্তরসূরি অজাতশত্রু মগধের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে মগধ শাসন করেন এবং তার পিতার সম্প্রসারণ ও একত্রীকরণের উত্তরাধিকার অব্যাহত রাখেন। রাজা প্রসেনজিতের নেতৃত্বে অজাতশত্রু বিশেষ করে প্রতিবেশী রাজ্য কোসল থেকে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। এই দ্বন্দ্বগুলি মগধের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় চিহ্নিত করেছিল, কারণ অজাতশত্রু তার আধিপত্য জাহির করতে এবং রাজ্যের সীমানা সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলেন।

 মগধকে বাহ্যিক হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য, অজাতশত্রু পাটলিপুত্র শহরকে তার রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলেন এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো দিয়ে এটিকে সুরক্ষিত করেন। এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কেবল আক্রমণকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে কাজ করেনি বরং রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রশাসনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। পাটলিপুত্র পরবর্তী রাজবংশের অধীনে প্রাচীন ভারতে একটি বিশিষ্ট শহর হয়ে উঠবে।

 দ্বন্দ্ব এবং সামরিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, অজাতশত্রুর রাজত্ব আরও আঞ্চলিক সম্প্রসারণ প্রত্যক্ষ করেছিল। তিনি সফলভাবে কাশী শহরকে যুক্ত করেন এবং অন্যান্য অঞ্চলে মগধের প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেন। অজাতশত্রুর শাসনকাল ভারতীয় উপমহাদেশে মগধকে একটি প্রভাবশালী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং দৃঢ়সংকল্প দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল।

 অজাতশত্রুর রাজত্ব, তার সামরিক অভিযান এবং পাটলিপুত্রের দুর্গের মাধ্যমে, বৃহদ্রথ রাজবংশকে শক্তিশালী করতে এবং একটি শক্তিশালী রাজ্য হিসাবে মগধের অবস্থানকে দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। একজন যোদ্ধা রাজা হিসেবে তার উত্তরাধিকার এবং মগধের সম্প্রসারণ ও একত্রীকরণে তার অবদান চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অধীনে মৌর্য সাম্রাজ্যের পরবর্তী উত্থানের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

 5. পতন ও পতন: 

বৃহদ্রথ রাজবংশের পতন ও পতন মগধের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়কে চিহ্নিত করে। বিম্বিসার, অজাতশত্রু এবং মহাপদ্ম নন্দের মতো শাসকদের অধীনে তার শীর্ষস্থানে পৌঁছানোর পরে, রাজবংশটি বিভিন্ন কারণের মুখোমুখি হয়েছিল যা এর পতনে অবদান রেখেছিল।

  •  - অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব: বৃহদ্রথ রাজবংশের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই এবং উত্তরাধিকার বিরোধ এর স্থায়িত্ব ও সংহতিকে দুর্বল করে দিয়েছিল। প্রতিযোগী দলগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করে, যার ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং কেন্দ্রীভূত কর্তৃত্ব হারায়।
  •  - বাহ্যিক আক্রমণ: বৃহদ্রথরা প্রতিবেশী রাজ্য এবং আঞ্চলিক শক্তির বাহ্যিক আক্রমণ এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল। এই আক্রমণগুলি, দুর্বল অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষার সাথে মিলিত, ক্ষমতার উপর রাজবংশের দখল এবং মগধের অঞ্চলগুলিকে রক্ষা করার ক্ষমতাকে আরও দুর্বল করেছিল।
  •  - মৌর্য সাম্রাজ্যের উত্থান: বৃহদ্রথদের চূড়ান্ত আঘাত আসে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উত্থানের সাথে। মগধের দুর্বল রাজ্যকে পুঁজি করে, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, তার উপদেষ্টা চাণক্যের সাহায্যে, শেষ বৃহদ্রথ শাসককে উৎখাত করেন এবং মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্রাচীন ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাম্রাজ্য হয়ে উঠবে।

 বৃহদ্রথ রাজবংশের পতন ও পতন মগধের ইতিহাসে একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছিল। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অধীনে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রাধান্য লাভ করে, যা ভারতীয় ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। তাদের পতন সত্ত্বেও, বৃহদ্রথরা প্রভাবশালী শাসক হিসাবে একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছেন যারা প্রাচীন মগধের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপকে রূপ দিয়েছেন এবং ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহাসিক বর্ণনায় অবদান রেখেছেন।

 6. ঐতিহাসিক তাৎপর্য: 

প্রাচীন ভারতের প্রেক্ষাপটে বৃহদ্রথের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। তাদের শাসন ও কর্ম তৎকালীন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ভূখণ্ডে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এখানে তাদের ঐতিহাসিক তাত্পর্যের তিনটি মূল দিক রয়েছে:

  •  1. মগধের সম্প্রসারণ: বৃহদ্রথরা মগধ রাজ্যের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সামরিক বিজয় এবং কৌশলগত জোটের মাধ্যমে, তারা তাদের অঞ্চলগুলিকে প্রসারিত করেছিল, মগধকে একটি শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী রাজ্যে রূপান্তরিত করেছিল। এই সম্প্রসারণ পরবর্তী মৌর্য সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করে, যা প্রাচীন ভারতে প্রথম প্রধান সাম্রাজ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়।
  •  2. বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা: বৃহদ্রথ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিম্বিসার ছিলেন গৌতম বুদ্ধ এবং বৌদ্ধ ধর্মের একজন উল্লেখযোগ্য পৃষ্ঠপোষক। তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা মগধে এবং তার বাইরেও বৌদ্ধধর্ম প্রচারে সহায়তা করেছিল। বুদ্ধের সাথে বিম্বিসারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং বৌদ্ধ সন্ন্যাস সম্প্রদায়ে তার অবদান এই অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মের প্রাথমিক প্রসার ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
  •  3. মৌর্য সাম্রাজ্যে উত্তরণ: বৃহদ্রথদের পতন এবং পতন ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে চিহ্নিত। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য কর্তৃক বৃহদ্রথদের উৎখাত মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠার দিকে পরিচালিত করে, যা প্রাচীন ভারতের অন্যতম উল্লেখযোগ্য সাম্রাজ্য হয়ে ওঠে। মৌর্যদের উত্থান রাজনৈতিক একত্রীকরণ, সাংস্কৃতিক বিকাশ এবং প্রশাসনিক অগ্রগতির একটি সময়কে চিহ্নিত করে, যা আগামী শতাব্দীর জন্য ভারতীয় ইতিহাসের গতিপথকে রূপ দেয়। 

 সামগ্রিকভাবে, বৃহদ্রথদের ঐতিহাসিক তাৎপর্য নিহিত রয়েছে শাসক হিসেবে তাদের ভূমিকার মধ্যে যারা মগধ রাজ্যের বিস্তৃতি, তাদের বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা এবং পরবর্তীকালে মৌর্য সাম্রাজ্যে উত্তরণ ঘটায়। তাদের ক্রিয়াকলাপ এবং প্রভাব প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপকে আকার দিয়েছে এবং এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক বর্ণনায় একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছে।

Related Short Question:

1. বৃহদ্রথ রাজবংশ কে প্রতিষ্ঠা করেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তর: ক) বিম্বিসার


 2. বৃহদ্রথরা কোন রাজ্যে রাজত্ব করতেন?

 ক) কোশল

 খ) কাশী

 গ) মগধ

 ঘ) বৎস

 উত্তরঃ গ) মগধ


 3. বৃহদ্রথ বংশের কোন রাজা গৌতম বুদ্ধের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তর: ক) বিম্বিসার


 4. বৃহদ্রথ রাজবংশের কোন রাজা পাটলিপুত্র নগরকে সুরক্ষিত করেছিলেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তরঃ খ) অজাতশত্রু


 5. কার শাসনামলে মগধ প্রাচীন ভারতের বৃহত্তম সাম্রাজ্য হয়ে ওঠে?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তর: গ) মহাপদ্ম নন্দ


 6. মগধে বৃহদ্রথদের পূর্বে শেষ শাসক রাজবংশ কোনটি ছিল?

 ক) মৌর্য রাজবংশ

 খ) প্রদ্যোত রাজবংশ

 গ) গুপ্ত রাজবংশ

 ঘ) কুষাণ রাজবংশ

 উত্তর: খ) প্রদ্যোত রাজবংশ


 7. কে বৃহদ্রথদের উৎখাত করে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তরঃ ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য


 8. বৃহদ্রথ রাজবংশের পতনের মূল কারণ কী ছিল?

 ক) অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব

 খ) বহিরাগত আক্রমণ

 গ) মৌর্য সাম্রাজ্যের উত্থান

 ঘ) উপরের সবগুলো

 উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো


 9. বৃহদ্রথ রাজবংশের কোন রাজা প্রতিবেশী রাজ্য কোশলের সাথে দ্বন্দ্বের সম্মুখীন হয়েছিলেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তরঃ খ) অজাতশত্রু


 10. বৃহদ্রথ রাজবংশের শেষ শাসক কে ছিলেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তর: গ) মহাপদ্ম নন্দ


11. বৃহদ্রথ রাজবংশের সময় কোন শহরটি মগধের রাজধানী ছিল?

 ক) পাটলিপুত্র

 খ) বারাণসী

 গ) তক্ষশীলা

 ঘ) উজ্জয়িনী

 উত্তর: ক) পাটলিপুত্র


 12. বৌদ্ধধর্মের প্রসারে বৃহদ্রথরা কী প্রভাব ফেলেছিল?

 ক) তারা বৌদ্ধদের অত্যাচার করেছিল

 খ) তারা বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি উদাসীন ছিল

 গ) তারা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন

 উত্তর: গ) তারা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন


 13. কোন বৃহদ্রথ রাজা অন্যান্য অঞ্চলের উপর মগধের প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তর: গ) মহাপদ্ম নন্দ


 14. বৃহদ্রথ রাজবংশের পতনের পর কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছিল?

 ক) গুপ্ত সাম্রাজ্যের উত্থান

 খ) মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা

 গ) মুঘল সাম্রাজ্যের উত্থান

 ঘ) মারাঠা কনফেডারেসি গঠন

 উত্তর: খ) মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা


 15. বৃহদ্রথদের আগে কোন রাজবংশ মগধ শাসন করেছিল?

 ক) গুপ্ত রাজবংশ

 খ) মৌর্য রাজবংশ

 গ) প্রদ্যোত রাজবংশ

 ঘ) কুষাণ রাজবংশ

 উত্তর: গ) প্রদ্যোত রাজবংশ


 16. বৃহদ্রথ শাসকদের মধ্যে কে মগধের জন্য শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো নির্মাণের সাথে যুক্ত?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তরঃ খ) অজাতশত্রু


 17. বৃহদ্রথ রাজবংশের পতনের প্রাথমিক কারণ কী ছিল?

 ক) অর্থনৈতিক পতন

 খ) দুর্ভিক্ষ ও খরা

 গ) বহিরাগত আক্রমণ

 ঘ) অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই

 উত্তর: ঘ) অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই


 18. কোন বৃহদ্রথ রাজা মগধের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তর: গ) মহাপদ্ম নন্দ


 19. কে বৃহদ্রথদের উৎখাত করে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?

 ক) বিম্বিসার

 খ) অজাতশত্রু

 গ) মহাপদ্ম নন্দ

 ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য

 উত্তরঃ ঘ) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য


 20. বৃহদ্রথ রাজবংশের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কি ছিল?

 ক) মগধের সম্প্রসারণ

 খ) বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা

 গ) মৌর্য সাম্রাজ্যে উত্তরণ

 ঘ) উপরের সবগুলো

 উত্তর: ঘ) উপরের সবগুলো

Tags:
Next Post Previous Post