বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন কী? বঙ্গভঙ্গের পশ্চাতে প্রকৃত উদ্দেশ্য কি ছিল? বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ধারাগুলি কী ছিল?
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন কী?
রাজনৈতিক চেতনাসম্পন্ন বাঙালিকে দুর্বল করে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কার্জন বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এই সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমগ্র দেশজুড়ে যে আন্দোলনের সূচনা হয় তা বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত।
বঙ্গভঙ্গের পশ্চাতে কার্জনের প্রধান যুক্তিগুলি কী ছিল?
বঙ্গভঙ্গের পশ্চাতে কার্জনের প্রধান যুক্তিগুলি ছিল-
- 📍১। একজন গভর্নরের পক্ষে বাংলা বিহার উড়িষ্যাকে নিয়ে গঠিত এতবড়ো প্রদেশের শাসনভার ভালোভাবে শাসন করা সম্ভব নয়,
- 📍২। সুদূর কোলকাতা থেকে দুর্গম পূর্ববাংলাকে শাসন করা সম্ভব হচ্ছে না,
- 📍৩। কোলকাতা কেন্দ্রিকতার জন্য পূর্ববঙ্গ, আসাম, উড়িষ্যার উন্নতি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে,
- 📍৪। মুসলিম প্রধান পূর্ববাংলা হিন্দু প্রভাব থেকে মুক্ত হলে তাদের উন্নয়নে সুবিধে হবে।
বঙ্গভঙ্গের মূল পরিকল্পনা কী ছিল?
বঙ্গভঙ্গের মূল পরিকল্পনা অনুসারে ঢাকা-চট্টগ্রাম, রাজশাহী, পার্বত্য ত্রিপুরা ও উত্তরবঙ্গের একাংশের সাথে আসামকে যুক্ত করে পূর্ববঙ্গ ও আসাম গঠিত হবে, বাকী বাংলা, বিহার, উড়িষ্যাকে নিয়ে বাংলা প্রদেশ গঠিত হবে।
বঙ্গভঙ্গের পশ্চাতে প্রকৃত উদ্দেশ্য কি ছিল?
বঙ্গভঙ্গের পশ্চাতে প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল—
- 📍১। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ঐক্যবদ্ধ বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করা।
- 📍২। দুই প্রদেশেই রাজনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন হিন্দুদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করে তাদের দুর্বল করে তোলা।
- 📍৩। বাংলাকে ব্যবচ্ছেদ করে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা, প্রভৃতি।
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ধারাগুলি কী ছিল?
- 📍১। বয়কট অর্থাৎ বিদেশী পণ্য বর্জন ও বিদেশী সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা।
- 📍২। স্বদেশী অর্থাৎ দেশীয় পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার।
- 📍৩। জাতীয় শিক্ষা অর্থাৎ জাতীয় আদর্শে ও জাতীয় নিয়ন্ত্রাধীনে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।